২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট বিশ্লেষণ

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এই বাজেট দেশের ৫৪তম এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট। এতে রাজস্ব আয়, ব্যয়, ঘাটতি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নয়ন কর্মসূচির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
রাজস্ব আয় ও লক্ষ্যমাত্রা
উৎস | পরিমাণ (কোটি টাকা) | জিডিপির শতাংশ |
---|---|---|
মোট অভ্যন্তরীণ প্রাপ্তি | ৫,৬৪,০০০ | ৯% |
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) | ৪,৯৯,০০০ | - |
এনবিআর-বহির্ভূত কর | ১৯,০০০ | - |
কর ব্যতীত প্রাপ্তি (এনটিআর) | ৪৬,০০০ | - |
বৈদেশিক অনুদান | ৫,০০০ | - |
বাজেট ঘাটতি ও অর্থায়ন
- মোট বাজেট ঘাটতি: ২,২৬,০০০ কোটি টাকা (জিডিপির ৩.৬%)
- অভ্যন্তরীণ ঋণ: ১,২৫,০০০ কোটি টাকা
- বৈদেশিক ঋণ: ১,০১,০০০ কোটি টাকা
আরো জানুন -
মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি
সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মূল্যস্ফীতি ৬.৫% এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.৫% নির্ধারণ করেছে। তবে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং এডিবি পূর্বাভাস দিয়েছে যে, প্রবৃদ্ধি এর চেয়ে কম হতে পারে।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)
এডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ২,৩০,০০০ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের তুলনায় কম। এতে অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি এবং পরিবেশ খাতে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
খাতভিত্তিক বরাদ্দ
খাত | বরাদ্দ (কোটি টাকা) |
---|---|
শিক্ষা | ৮৭,০০০ |
স্বাস্থ্য | ৪১,৯০৮ |
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি | ৩৬,০০০ |
সড়ক ও রেল পরিবহন | ৪৫,০০০ |
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি | ১২,০০০ |
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন | ৮,০০০ |
করনীতি ও শুল্ক পরিবর্তন
বাজেটে করনীতি সহজীকরণ এবং রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলো হলো:
- ওটিটি প্ল্যাটফর্মের উপর ১০% সম্পূরক শুল্ক
- স্বাস্থ্যসেবা উপকরণে কর অব্যাহতি ২০৩০ পর্যন্ত বৃদ্ধি
- ইলেকট্রিক যানবাহনের উৎপাদনে কর অব্যাহতি
- স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক হ্রাস
সমাপনী মন্তব্য
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। এতে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং উন্নয়ন কর্মসূচির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তবে, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।